27 শনি, নভেম্বর 2010 06:42 অপরাহ্ণ
|
দিনাজপুরের কৃতি সন্তান মোঃ জুলফিকার রহমানকে তুরষ্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করা হয়েছে। গত ১ নভেম্বর, ২০১০ তিনি তুরস্কের রাষ্ট্রপতি আব্দুল্লাহ গুল এর নিকট এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। পরদিন ২ নভেম্বর তুরস্কের জাতির জনক আতাতুর্ক কামাল পাশার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে উক্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্নহয়।
পরিচয়পত্র প্রদানের পর রাষ্ট্রদূত জূলফিকার রহমান তুরস্কের রাষ্ট্রপতির সাথে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। উক্ত বৈঠকে তুরস্কের পররাষ্ট্র সচিব এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তুরস্কের রাষ্ট্রপতি আব্দুল্লাহ গুল-এর নিকট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রির শ্রভেচ্ছা ও শুভ কামনা বার্তা পৌছে দেন । রাষ্ট্রপতি আব্দুল্লাহ গুল তাঁর ফ্রেরুয়ারী ২০১০-এ ঢাকা সফরের কথা সাগ্রহে স্মরণ করেন এবং সে সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রির সাথে তাঁর ফলপ্রসু সাক্ষাৎকার ও আলোচনার কথা উল্লেখ করেন। তাঁর উক্ত সফরের ফলশ্রতিতে আগামী ডিসেম্বর মাসে "টার্কিস এয়ারলাইন্স" ইস্তাম্বুল- করাচি- ঢাকা রুটে ফ্লাইট চালু করায় তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত জূলফিকার রহমান তুরস্কের রাষ্ট্রপতিকে তাঁর এ উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, অচিরেই এ ফ্লাইট সরাসরি ইস্তাম্বুল এবং ঢাকার মধ্যে পরিচালিত হবে। রাষ্ট্রপতি গুল বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে আকাশ পথে সরাসরি যোগাযোগের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং মত প্রকাশ করেন, এ ধরনের আন্তযোগাযোগ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে আরো উদ্দীপ্ত করবে। তিনি রাষ্ট্রদূতকে আশ্বাস দেন যে, অচিরেই টার্কিস এয়ারলাইন্স ইস্তাম্বুলএবং ঢাকার মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
রাষ্ট্রদূত তুরস্কের রাষ্ট্রপতির ঢাকা সফরের অন্যান্য বিষয়াদি নিয়েও আলোচনা করেন যার মধ্যে দু’দেশের বানিজ্য বৃদ্ধি এবং সে সাথে বাংলাদেশে আরোও বেশি পরিমানে তুরস্কের বিনিয়োগের বিষয়ও অর্ন্তভুক্ত ছিল। তিনি রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেন যাতে তিনি তুরস্কের বিনিয়োগকারিদের বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের সুযোগ নিয়ে আরো বেশি করে বিনিযোগে উৎসাহিত করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগসহ সকল ক্ষেত্রই তুরস্কের বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত আছে। খাদ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রি এ ক্ষেত্রটিকে প্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্ণিত করেছেন মর্মে তিনি তুরস্কের রাষ্টূপতিকে জানান। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে এ মর্মে আশ্বস্ত করেন যে একটি সম্ভাবনাপূর্ন ভ্রাতৃপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে বিনিয়োগে তুরষ্কের বিনিয়োগকারিদের, বিশেষ করে কৃষিপণ্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবেন। রাষ্ট্রদূত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিশেষ করে তুরস্কে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির বিভিন্ন পন'া নিয়েও আলোচনা করেন। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে তাঁর পক্ষ থেকে সর্বাত্নক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রাষ্ট্রদূত পরবর্তীতে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রির আসন্ন ঢাকা সফর বিষয়েও রাষ্ট্রপতি আব্দুল্লাহ গুল-এর সাথে আলোচনা করেন। আগামী ১৩-১৪ নভেম্বর ২০১০-এ অনুষ্ঠিতব্য এ সফরকালে দু’দেশের মধ্যে স্বাস'্যখাতে সহযোগিতা সংক্রান- চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনার ব্যাপারে তিনি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। দু’দেশের মধ্যে দূতাবাস স'াপন সংক্রান- জমি বিনিময় চুক্তিও উক্ত সফরকালে সম্পন্ন হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল্লাহ গুল দু’দেশের সম্পর্ক সমপ্রসারণের বর্তমান প্রক্রিয়ায় সনে-াষ প্রকাশ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, এ ধরণের উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময় দু’দেশের সম্পর্কে গুনগত পরিবর্তন আনবে যা দু’দেশের জনগনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। রাষ্ট্রপতি আব্দুল্লাহ গুল রাষ্ট্রদুত জুলফিকার রহমানকে বাংলাদেশ ও তুরস্কের সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরো গভীর ও প্রসারিত করার লক্ষ্যে তাঁর প্রচেষ্টায় সর্বাত্নক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, জুলফিকার রহমানের পিতা আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহেদ ও মাতা আলহাজ্ব হাসনা বানু খানম। তার গ্রামের বাড়ী চিরিরবন্দরের উত্তর পলাশবাড়ী। তিনি ১৯৭৭ সালে দিনাজপুর জিলা স্কুল হতে এস,এস,সি ও ১৯৮৯ সালে দিনাজপুর সরকারী কলেজ হতে এইচ,এস,সিতে ১ম বিভগে উত্তীর্ণ হন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হতে এম,বি,বি,এস ডিগ্রী অর্জনের পর পররাষ্ট্র দপ্তরে যোগ দেন।
|