প্রবেশ করুন ₪ দিনাজপুরিয়া? সদস্য নন? যোগদিন

দিনাজপুর ইনফো ডট কম-এ আপনাকে স্বাগতম! সাইটটির 'ঘষামাজা'র কাজ চলছে। কোন সমস্যা হলে খুব সম্ভব সেটা সাময়িক। ধন্যবাদ।
আলমামুন

এক টুকরো মেঘ ও দুখী গাছ

লিখেছেন আলমামুন
আলমামুন
Only the better day was yesterday!!
User is currently offline
সময় জুলাই 20 in /ব্লগ/বিভাগ/listings/1-এলোমেলো

এক টুকরো মেঘ। পথভুলে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করছে আকাশে। তার কোনো সঙ্গী নেই। কারও সাথে মনের কথা বলতে পারে না সে। ভীষণ খারাপ হয়ে আছে তার মনটা। সে একা একা ভেসে বেড়ায় আকাশে। দিন যায় রাত যায়। মেঘের টুকরোটি ভাসতে ভাসতে চলে আসে একটা বিরাণ ভূমির উপর। সে নিচে তাকিয়ে দেখে বিশাল মাঠে একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে। গাছটির আশেপাশে আর কোন গাছ নেই। মেঘটি মনে মনে ভাবল, বোধ হয় ওই গাছটি আমার মতোই একা। আমার মতো তারও যদি কোনো কষ্ট থাকে! একা থাকার কষ্ট। আমি যাই না কেন তার কাছে?

এক টুকরো মেঘ। পথভুলে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করছে আকাশে। তার কোনো সঙ্গী নেই। কারও সাথে মনের কথা বলতে পারে না সে। ভীষণ খারাপ হয়ে আছে তার মনটা। সে একা একা ভেসে বেড়ায় আকাশে। দিন যায় রাত যায়। মেঘের টুকরোটি ভাসতে ভাসতে চলে আসে একটা বিরাণ ভূমির উপর। সে নিচে তাকিয়ে দেখে বিশাল মাঠে একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে। গাছটির আশেপাশে আর কোন গাছ নেই। মেঘটি মনে মনে ভাবল, বোধ হয় ওই গাছটি আমার মতোই একা। আমার মতো তারও যদি কোনো কষ্ট থাকে! একা থাকার কষ্ট। আমি যাই না কেন তার কাছে?

মেঘটি ধীরে ধীরে চলে এলো গাছটির কাছে। দেখে মনে হল রোগাপটকা গাছটি অনেক সংগ্রাম করে কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে। একটি পাতাও নেই শাখায়। শুকিয়ে গেছে গাছের শরীর ।
মেঘটি আরেকটু কাছে আসতেই দুর্বল গাছটি করুনভাবে তাকালো তার দিকে। কিন্তু কিছুই বলল না।
মেঘটি আরও কাছে এলো। মেঘের শীতল ছায়া গিয়ে পড়ল গাছের ওপর। ওমনি গাছটির গতর কেঁপে উঠল। আহ্ কী আরাম-আপন মনে বলে উঠল গাছটি।
মেঘটি বলে, গাছভাই, এ বিশাল মাঠে আর কাউকে দেখছি না যে! তুমি কি আমার মতোই একা? তোমার শরীর-স্বাস্থ্যের এ অবস্থা কেন?
কী আর বলব ভাই। ভীষণ কষ্টের মধ্যে পড়ে আছি। এই যে বিশাল পতিত ভূমি দেখছ, এখানে আর কোনো গাছ নেই। আমি একদম একা। আমার সাথে কথা বলার কেউ নেই। আমার কষ্টের কথা কাউকে বলতে পারি না। তুমি কি আমার সাথে থেকে গল্প করবে মেঘভাই? মায়া করে বলল গাছটি।  মেঘটি আনন্দে মুখ বাড়িয়ে বলে, দেখো, তোমার মতো আমারও অনেক কষ্ট। একা একা থাকি। মনের কথা মনের ভেতরে পড়ে আছে; বলতে পারি না কাউকে। আমি তোমার কাছেই থাকব। আমরা অনেক গল্প করব। আনন্দে কেটে যাবে সময়।
গাছটি খুশি হয়ে বলে, আচ্ছা, তাহলে এখন থেকে আমরা দুজন পরাণের বন্ধু হয়ে গেলাম। কেউ কাউকে কখনও ছেড়ে যাব না। কথা দাও মেঘভাই।
কথা দিলাম-বলে মেঘটি গাছে এসে বসল।

মেঘের ছোঁয়ায় গাছটি তরতাজা হয়ে উঠল। কচি কচি পাতা গজাতে শুরু করল। দেখতে দেখতে সবুজ পাতায় আর ফুলে-ফলে ভরে গেল গাছটি। কী সুন্দর গাছ!  একটা কাঠবিড়ালি কোত্থেকে এসে আনন্দে ছুটোছুটি করতে লাগল গাছের ডালে ডালে, পাতায় পাতায়। পোকামাকড়রা বাসা বাঁধতে লাগল। নানা জাতের পাখি এসে কিচিরমিচির করছে, গান গাইছে, তারা মনের সুখে বাসা তৈরি করে সংসার পাতছে। বনের পশুরা শিকার ধরে খেয়েদেয়ে গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছে।
এসব কারণে গাছটি নিজেকে খুব বড় কিছু মনে করতে লাগল। সে বড়াই করে বলে, এই বিারণভূমিতে আমার আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া পশু-পাখিরা বেঁচে থাকতে পারবে না কিছুতেই। সে নিজেকে তার কাছে আশ্রয় নেওয়া পশু-পাখি, পোকা-মাকড়দের রাজা ভাবতে শুরু করল।

গাছটি আগের মত মেঘের সাথে আর গল্প করে না। মেঘের খবরও নেয় না। এমন কি আগ্রহ করে তার সাথে একটি কথাও বলে না। খুব কষ্ট পেল মেঘটা। সে গাছের এক কোনে চুপচাপ বসে থাকে সারাদিন। মেঘ ভাবে, এভাবে আর বসে থেকে লাভ কী? আমি তো সেই আগের মতো একা হয়ে গেলাম। গাছভাই, তুমি যদি আমার সাথে গল্প না করো, তো আমি খুব কষ্ট পাই। আমি এমন কী অন্যায় করেছি যে তুমি একটি কথাও বলছো না আমার সাথে? কষ্টে আর অভিমানে কেঁদে ফেলল মেঘটি।
গাছটি ত্যাজ দেখিয়ে বলে, দেখছ না কত ব্যস্ত আমি। এতটুকু সময় নেই আমার। কত পশু আমার ছায়ায় এসে প্রাণ জুড়ায়, কত পোকামাকড় আর পাখি আমার ফুল-ফল খেয়ে আমার আশ্রয়ে বেঁচে আছে। তাদের সুখ-দুখ আমাকে দেখতে হয়। শাসন করতে হয়। কারণ ওরা আমার প্রজা। কথা বলার সময় নেই আমার। এখন আমি খুবই ব্যস্ত। বরং তুমি অন্য চিন্তা করো গে।
মেঘ অবাক হয়ে বলে, অন্য চিন্তা করো গে, মানে?
গাছটি বলল আমি তো তোমাকে মোটেও সময় দিতে পারছি না। বিরাট রাজ্য আমার। সবাইকে নিয়ে আমার ভাবতে হয়। দেখো, এমন কোন বেকার গাছের সন্ধান পাও কি না যে সারাক্ষণ চুটিয়ে গল্প করতে পারবে তোমার সাথে।
মেঘটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, ও, এই কথা? ঠিক আছে, বিদেয় হই তাহলে।
গাছ খুশি হয়ে সাথে সাথে বলে, যাও, ভালো থেকো বন্ধূ।

মন খারাপ করে চলে গেল মেঘ।
মেঘটি চলে যাওয়ার পর গাছটি শুকিয়ে যেতে লাগল। তার পাতাগুলো ঝরে পড়ে গেছে। গাছের পাতা নেই, ছায়া নেই। ধীরে ধীরে তার কাছ থেকে সরে গেল পশুপাখি, পোকামাকড় সব। ঠিক আগের মত একা ও দুখী হয়ে গেল গাছটি।  এখন আকাশের দিকে চেয়ে থাকে দুখী গাছটি। যদি মেঘবন্ধুর দেখা পাওয়া যায়!

একদিন গাছটি দেখে তার উপর দিয়ে সেই মেঘটি অন্য মেঘের সাথে হাসি-তামাশা করতে করতে উড়ে যাচ্ছে। গাছটি চিৎকার করে ‘মেঘবন্ধূ, ‘মেঘবন্ধু’ বলে ডাকল কিন্তু তার দিকে ফিরেও তাকালো না মেঘটি।

লেখাটি মেইলযোগে পাওয়া
লেখক: বিএম বরকতউল্লাহ
মুঠোফোন: ০১৭১১৫১৬৫৫৯

(লেখাটি পেয়েছি প্রায় মাসদুয়েক। বিজয় কিবোর্ডে লেখার জন্য প্রকাশ করা যাচ্ছিলো না। তারপরও, দেরী করে প্রকাশের জন্য দুঃখিত)

প্রাসঙ্গিক শব্দ: গল্প
দেখা হয়েছে: 9
এই ব্লগটি মূল্যয়ন করুন
0 ভোট

    মন্তব্য করুন

    মন্তব্যে আপনার (অতিথি) ছবি দেখাতে গ্রাবতার অথবা ওয়ার্ডপ্রেসে ব্যবহৃত ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করুন। সদস্যগণের ছবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেখাবে।


    স্প্যামরোধী কোড
    আবার দেখান

    joomla 1.6

    কিভাবে অবদান রাখবেন?

    পরিচালনা দল

    অনুদান করতে

    Dutch-Bangla Bank Ltd.

    DINAJPURINFO.COM

    172.110.3968